প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের সাথে সাবস্টেশন জগতের দুই রক্ষাকবচ VCB/ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার এবং SF6 সার্কিট ব্রেকার নিয়ে আড্ডা জমাতে এসেছি। এই দুই ব্রেকার সাবস্টেশনকে রক্ষার জন্য রাম-লক্ষণ কিংবা কারাণ-অর্জুনের মত কাজ করে চলছে প্রতিনিয়ত। চলুন আড্ডা শুরু করা যাক।

SF6 সার্কিট ব্রেকার কি?

যে সার্কিট ব্রেকারে SF6 (Sulphur Hexafluoride) গ্যাসের চাপ ব্যবহার করে আর্ক দূরীভূত করা হয় তাকে SF6 সার্কিট ব্রেকার বলে।

 ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার কি?

যে সার্কিটের ব্রেকার শূণ্য মাধ্যমে সৃষ্ট আর্ক অবদমন করতে সক্ষম তাকে ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার বলে।

 আর্ক কি?

আর্ক হল এক ধরনের ইলেক্ট্রিক্যাল ডিসচার্জ যা দুটো পরিবাহী ইলেক্ট্রোডের মধ্যে সৃষ্টি হয় এবং স্পার্ক তৈরি করে। আর আর্ক সৃষ্টির দরুণ দুটো ইলেক্ট্রোডের মধ্যে যে ভোল্টেজ তৈরি হয় তাকে আর্কিং ভোল্টেজ বলে।

আর্ক
আর্ক

ব্রেকারগুলো কোথায় ব্যবহার হয়?

প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি গ্রীড সাবস্টেশনে SF6 সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়। ৩৩ থেকে ৮০০ কিলোভোল্ট পর্যন্ত ট্রান্সমিশন লাইন এর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। 

সাধারণত 33/11 kV ডিস্ট্রিবিউশন সাবস্টেশনের জন্য ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়। তবে এই ব্রেকারের ভোল্টেজ রেটিং 3 থেকে 38 kV পর্যন্ত হয়ে থাকে। ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারে এক ধরনের চেম্বার থাকে যা ভ্যাকুয়াম ইন্টারাপ্টার চেম্বার নামে পরিচিত।

  SF6 গ্যাস ব্যবহার করার সুবিধা কি?

  • SF6 গ্যাস অন্যান্য গ্যাসের তুলনায় আর্ক কে সহজে অবদমন করতে পারে
  • এতে উচ্চমানের ডাই-ইলেক্ট্রিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
  • এটি অদাহ্য এবং অবিষাক্ত গ্যাস
  • এটি নিষ্ক্রিয় ধরনের যার দরুণ অপ্রত্যাশিত বিক্রিয়ার সুযোগ নেই
  • এটি অত্যাধিক মাত্রায় ইলেক্ট্রোনেগেটিভ যার দরুণ মুক্ত ইলেক্ট্রনগুলো অতি সহজেই চলাচল করতে পারে।
  • এতে অত্যাধিক ইন্সুলেটিং বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান
  • এর তাপ পরিবহন ক্ষমতা অনেক বেশি

  এই গ্যাসের অসুবিধাসমূহ

  • এই গ্যাস বায়ু অপেক্ষা ভারী। তাই মাঝে মধ্যে শাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
  • এটি আর্দ্রতা সহনীয় নয়।
  • এই ব্রেকারের অভ্যন্তরীণ চেম্বারগুলো প্রায়শ পরিষ্কার রাখতে হয়।
  • এই ব্রেকারের রক্ষণাবেক্ষণ বেশ সতর্কতার সহিত করতে হয়।

   ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের সুবিধা

  • বদ্ধ অবস্থায় আগুনের কোন ঝুঁকি নেই।
  • বজ্রপাত সহ্য করতে পারে।
  • রক্ষণাবেক্ষণের তেমন প্রয়োজন হয়না এবং নিঃশব্দে কাজ করে।
  • ২০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
  • উৎপন্ন আর্ক অপেক্ষাকৃত কম শক্তির। কোন ক্ষতিকারক গ্যাস তৈরি করেনা

   ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের অসুবিধা

  • ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকারের সাথে প্যারালালে ম্যাগনেটাইজিং কারেন্ট অবদমন যন্ত্র সংযুক্ত করতে হয়।
  • ৩৬ কিলোভোল্ট এর উপরে এই সার্কিট ব্রেকার রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে খোলা অবস্থায় রাখলে অগ্নিকান্ড ঘটার সম্ভবনা থাকে।
অন্যান্য পোস্টের লিংকঃ