শিহাব ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স বিষয় নিয়ে একটি নামকরা ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে। ইলেকট্রিক্যালের বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে সে খুব খুঁটিনাটি চিন্তা করে। একদিন মুষুলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। শিহাব ভার্সিটি যায়নি। তাই সে বারান্দায় বসে বসে বৃষ্টি উপভোগ করছে। হুট করে বিশাল শব্দে বাজ পড়ল। তখন শিহাব চমকে উঠল এবং ভাবতে লাগল, "বজ্রপাত সিগন্যাল কোন ধরনের সিগন্যাল? এসি নাকি ডিসি?"।
বজ্রপাত |
শিহাবের এই কৌতূহল শুধু তার একার নয় বরং অনেক ছাত্র/প্রকৌশলীর মনের প্রশ্ন। চলুন আজ কৌতূহলের সমাধান করা যাক।
বজ্রপাত এসি নাকি ডিসি সিগন্যাল এ নিয়ে যত কনফিউশন
- বজ্রপাত এসি নাকি ডিসি সিগন্যাল? এই প্রশ্ন নিয়ে অনেকের মধ্যেই মতবিরোধ দেখা যায়।
- কোন মহাশয় বলেন এসি, আবার কোন মহাশয় বলেন ডিসি। আর এই মতবিরোধের যথেষ্ট কারণও আছে।
- মূলত বজ্রপাত হল দুমুখো সাপের মত। বজ্রপাতের মধ্যে এসি এবং ডিসি উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
- যেমন: এর পোলারিটি আছে এবং সর্বদা একই পথে অগ্রগামী ফলে একে ডিসি ভোল্টেজের খেতাব টা দেওয়াই যায়।
- কিন্তু অন্যদিকে ডিসিতে ভোল্টেজের মান ফিক্স থাকার কথা থাকলেও এটি ফিক্স না। এর এমপ্লিচুড পরিবর্তিত হয়। তাই একে আর ডিসি বলা যাচ্ছে না।
- আবার এর পোলারিটি আছে এবং সর্বদা একই দিকে যায় অর্থাৎ অল্টারনেটিং হয় না। তাহলে তো এসিও হচ্ছে না।
কি ঝামেলা রে বাবা!!! আসলেই এই ঝামেলার একটা সুরাহা হওয়ার দরকার। চলুন সমাধান খোঁজা শুরু করি।
বজ্রপাত এবং ইমপালসিভ ক্যারেক্টারের মানুষ
কিছু লোক আছেন যারা হুটহাট আবেগের বশীভূত হয়ে পড়ে বা রেগে যান। এদেরকে আমরা ইমপালসিভ ক্যারেক্টারের মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করি।
একইভাবে বজ্রপাতের চরিত্রও এরকম ইমপালসিভ ক্যারেক্টারের মানুষের মতই। বজ্রপাতও খুব অল্প সময়ের জন্য বড় মানে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়।
আর অনেকে শুনে অবাক হবেন যে, এই বজ্রপাত ভূ-পৃষ্ঠে ৩০,০০,০০০ ভোল্টেজ নিয়ে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে পতিত হতে পারে।
আর খুব অল্প সময়ে বিশাল মান নিয়ে যে ধরনের সিগন্যাল প্রবাহিত হয় তাদের ইমপালস সিগন্যাল বলে। তাই বজ্রপাতকে এক ধরনের ইমপালস সিগন্যাল বলা যায়। সাধারণত হার্ট পালসও কিন্তু এক ধরনের ইমপালসিভ সিগন্যাল।
ইমপালস সিগন্যাল |
বজ্রপাত নিয়ে অবাক হবার মত কিছু তথ্য
- আর বাংলাদেশের সিলেটের সুনামগঞ্জে তিন মাসে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২৬টি বজ্রপাত আঘাত হানে।
- পৃথিবীপৃষ্ঠের কোথাও না কোথাও প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪৪ বার বজ্রপাত ঘটছে, বছরশেষে গড়ে এই সংখ্যাটা প্রায় ১৪০০ মিলিয়নে গিয়ে দাঁড়ায়। বজ্রপাত সম্পর্কিত এই পরিসংখ্যান সত্যিই চমকে দেয়ার মত।
0 Comments